জীবন বৃত্তান্ত
ড. অলি আহমদ, বীর বিক্রম ১৯৩৯ সালের ১৩ মার্চ চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার বিখ্যাত ‘কুতুব’ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আমানত ছফা এবং মাতা মরহুমা বদরুননেছা। তিনি ১৯৫৭ সালে নিজ উপজেলার গাছবাড়িয়া এন. জি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি. পাস করেন এবং ১৯৬৬ সালে ন্যাশনাল কলেজ, করাচী থেকে বি.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমান রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে তিনি একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব। তাঁর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ জ্ঞান, প্রজ্ঞা এবং নিজেকে উন্নত করার অতৃপ্ত প্রয়াস। জাতীয় নেতা হিসেবে অনেক ব্যস্ততা সত্তে¡ও ড. অলি আহমদ ২০০৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর, “রেভ্যুলিউশন, মিলিটারি পারসোনেল এন্ড দি ওয়ার অফ লিবারেশন ইন বাংলাদেশ” শিরোনামে একটি গবেষণার উপর যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ব্রæকস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ. ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ব্রæকস বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অনারারী রিচার্স ফেলো।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় গাছবাড়ীয়া নিত্যানন্দ গৌরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র হিসেবে তিনি আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
এল.এল.বি. অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমীতে যোগ দেন এবং ১৯৬৫ সালে কমিশন লাভ করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে এবং ১৯৭০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে নিযুক্ত হন।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসের ক্রান্তিলগ্নে তৎকালীন ক্যাপ্টেন অলি আহমদ, লেঃ কর্নেল এম. আর. চৌধুরী এবং মেজর জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি গ্রহন করেন। ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চের রাতে ঢাকায় পাকিস্তান সামরিক জান্তার নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সংবাদ পাওয়ার পর, ক্যাপ্টেন অলি আহমদ ৮ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে সাথে নিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হন। মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই যুদ্ধের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। জিয়াউর রহমান ছিলেন চট্টগ্রামের ষোলশহরে অবস্থানরত ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সহ-অধিনায়ক এবং ক্যাপ্টেন অলি ছিলেন প্রথম কোয়ার্টার মাস্টার।
১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী থানার ফুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি সেনা বাহিনী, বিডিআর, পুলিশ, আনসার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ হেডকোর্য়াটার স্থাপন করেন। তৎকালীন মেজর জিয়া ক্যাপ্টেন অলি আহমদকে বৃহত্তর চট্টগ্রামে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পন করেন। তিনি সীতাকুÐ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা, চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিং এলাকা, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকা, চকবাজার, কক্সবাজার এবং কালুরঘাট রেডিও ষ্টেশন এলাকায় মেজর জিয়াউর রহমানের নির্দেশে বিভিন্ন অফিসারের নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য সেনা দল মোতায়ন করেন। বস্তুতঃ তারাই ২৬শে মার্চ ১৯৭১ সালে ঐ বিদ্রোহের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বর্তমান আধুনিক সশস্ত্র বাহিনীর ভীত রচনা করেন। ২৭শে মার্চ ১৯৭১ তিনি মেজর জিয়াউর রহমানকে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।
যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি কালুরঘাট, মীরেরসরাই, মস্তাননগর, করেরহাট, তুলাতুলী, হেয়াকু, চিকনছড়া, রামগড় এবং বেলুনিয়ার প্রসিদ্ধ যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্বের সাথে লড়াই করেন। পরবর্তী পর্যায়ে এপ্রিল মাসেই তিনি চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলার আংশিক অঞ্চলের (বেলুনিয়া, ফেনী নদী থেকে করেরহাট পর্যন্ত) সাব-সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। ঐ অঞ্চলে যুদ্ধ পরিচালনার সর্বময় ক্ষমতা তাকে প্রদান করা হয় এবং তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম সাব-সেক্টর কমান্ডার।
স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনিই সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে “বীর বিক্রম” খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে প্রসিদ্ধ ‘জেড ফোর্সের’ প্রথম বিগ্রেড মেজর হিসেবে তিনি নিয়োগ প্রাপ্ত হন এবং যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাঙ্গালী অফিসারদের মধ্যে একমাত্র “ব্রিগেড মেজর” হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭২ সালের অক্টোবর মাসে তিনি মেজর পদে উন্নীত হন। পরবর্তীতে তিনি ১৯, ৯, ১০ এবং ৬ষ্ঠ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সহ-অধিনায়ক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। চাকুরী জীবনে বিশিষ্ট অবদানের জন্য প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বি.ইউ, পিএসসি এবং লেঃ জেঃ মীর শওকত আলী, বি.ইউ, পিএসসি ক্যাপ্টেন অলি আহমদের বাৎসরিক গোপন প্রতিবেদনে একাধিকবার “অনন্য অসাধারণ অফিসার” এবং “সেনাবাহিনীর একজন উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্পদ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেন।”
ক্যাপ্টেন অলি আহমদ ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লে. কর্নেল হিসাবে পদোন্নতি পান। অতঃপর সৈয়দপুরে অবস্থানরত ২৪তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রথম অধিনায়ক হিসাবে তাকে নিযুক্ত করা হয়। নভেম্বর মাসের শেষ দিকে তিনি সেনা সদর দপ্তরে জেনারেল স্টাফ অফিসার-১ (অপারেশন) হিসাবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি সেনাপ্রধান, ডি.সি.এম.এল.এ. সশস্ত্রবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার, সি.এম.এল.এ. এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সাল হইতে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সামরিক বাহিনীতে ১৯টি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। লেঃ কর্নেল অলি এই বিদ্রোহ দমনে এবং দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৯ সালের নভেম্বর মাসে তিনি স্বেচ্ছায় চাকুরী থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৮০ সালের জানুয়ারি মাসে কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং ১০ই জানুয়ারী ১৯৮০ সালে ১৩ বৎসর চাকুরী অবশিষ্ট থাকার পরও চাকুরী হতে পদত্যাগ করে অবসর গ্রহণ করেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দীর্ঘ দিনের সহযোগী এবং বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে বঙ্গভবনে থাকা অবস্থায় পর্দার আড়ালে থেকে ড. অলি আহমদ নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করার ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন, যা পরবর্তীতে বি.এন.পি. হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সমগ্র দেশে বিএনপিকে সুসংগঠিত করার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। তিনি পার্টির অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা। যদিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৮০ সালের ফেব্রæয়ারী মাসে বিএনপিতে যোগদান করেন এবং মার্চ মাসে উপনির্বাচনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-১৩ নির্বাচনী এলাকা হতে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৮২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে কর্নেল অলি আহমদ যুব উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পান এবং সামরিক আইন জারী হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত উক্ত পদে বহাল ছিলেন। তিনি প্রথমবার ১৯৮০ সালের মার্চে, দ্বিতীয়বার ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি, তৃতীয়বার ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারী, চতুর্থবার ১৯৯৬ সালের ১২ জুন, পঞ্চমবার ২০০১ সালের ১ অক্টোবর এবং ৬ষ্ঠবার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৭ জন প্রবীন সদস্যদের মধ্যে অন্যতম।
১৯৮১-১৯৮২ সালে লেঃ জেঃ এইচ.এম. এরশাদ এর স্বৈরশাসনের সময় বি.এন.পির অধিকাংশ প্রবীন নেতা দল ত্যাগ করে এরশাদের সাথে যোগ দেন। কিন্তু ড. অলি আহমদকে কোন মূল্যেই স্বৈরশাসকদের দলে যোগদান করানো সম্ভব হয় নাই। তিনি সবসময় তার আত্মমর্যাদা সমুন্নত রেখেছেন। তিনি রাজনৈতিক জীবনে সর্বদা নিজস্ব নীতিতে অবিচল থেকেছেন এবং কখনও চাপের মুখে মাথা নত বা অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত স্বৈরশাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিবাদের কারণে তিনি দুইবার কারাবরণ করেন। তৃতীয়বার ১৬ই মে হতে ২৮শে মে ২০১২ পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রতিবাদের জন্য আওয়ামী লীগ তাঁকে কারাগারে বন্দী রাখেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বি.এন.পি’কে ঐক্যবদ্ধ রাখার ব্যাপারে, তিনি রাতদিন পরিশ্রম করেন, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং বেগম খালেদা জিয়াকে বি.এন.পি.’র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ফলে ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পথ প্রশস্ত হয়।
সুদীর্ঘ নয় বৎসর স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব, তার আন্তরিকতা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি নিজেকে বি.এন.পি-র একজন শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে দলের বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত হন।
১৯৯১ সালের ২০ মার্চ বি.এন.পি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করার পর অলি আহমদ পূর্ণ মন্ত্রী হিসাবে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত হন এবং ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে তিনি অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, সফলতা এবং দক্ষতার সাথে মন্ত্রণালয় পরিচালনা করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনিই বাংলাদেশে আধুনিক সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের রূপকার। ঢাকা মহানগর হতে দেশের প্রতিটি জেলার সাথে হাইওয়ে নির্মান এবং উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপনকারী সড়ক তার সময়েই নির্মিত হয়। তাঁর সময়ে দেশের বড় বড় সেতুগুলি নির্মিত হয় বা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, যেমন- যমুনা সেতু, (যার প্রায় ষাট শতাংশ কাজ তার সময় সম্পন্ন হয়,) দাউদকান্দি সেতু, রূপসা সেতু এবং ভৈরব সেতুর নাম উল্লেখযোগ্য। ঐ সময়ে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ব্যাপারে বিশ্ব ব্যাংক এবং এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের প্রবল চাপ উপেক্ষা করেন। পক্ষান্তরে, তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআরটিসি, বিআরটিএ’তে নতুন নতুন সংস্কারের মাধ্যমে মৃত প্রায় সংস্থাগুলির লোকসান হ্রাস করে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেন। এর মাধ্যমে কর্নেল অলি আহমদ একজন প্রশাসক হিসেবে তার দক্ষতা, প্রজ্ঞা এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তাধারা প্রদর্শন করেছেন।
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ¡াসের পর তিনি প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ত্রাণ, পুনর্বাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন। ঐ সময় প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পুরুষ, মহিলা ও শিশু প্রাণ হারান এবং ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ১০ দিন ছিল পুনর্বাসনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রামের সাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সর্বপ্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছিল লন্ডভন্ড অবস্থায়। সমুদ্র উপকূল এলাকায় প্রায় ২০-৩০ ফুট উচ্চ জলোচ্ছ¡াস হয়েছিল। এমনকি কেউ কারো খোঁজ নেওয়ার মত মানসিক অবস্থায় ছিলেন না। মৃতদেহগুলিকে দাফনের জন্য কাউকে পাওয়া যায় নাই। কারো ঘরে খাবার ছিল না, ছিল না বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানি। ৩০শে এপ্রিল তিনি নিজে সারা রাত্রি অরক্ষিত চট্টগ্রাম বন্দর এবং রেলওয়ে ষ্টোর পাহারা দেন। অবশ্য পরে সামরিক বাহিনী এবং পুলিশের সদস্যরা এই দায়িত্ব পালন করেন। এই ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ¡াসের ফলে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন, প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হন এবং ২৫ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হন। এমত অবস্থায়, তিনি আনসার এবং গ্রাম্য পুলিশের মাধ্যমে প্রথমে মৃতদেহগুলির দাফন এবং সৎকারের ব্যবস্থা নেন। একই সাথে ঐ কঠিন সময়ে তিনি একাকি চট্টগ্রাম জেলার দায়িত্বে নিয়োজিত অন্যান্য অফিসার এবং কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে রাত দিন পরিশ্রম করে ৭ দিনের মধ্যে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনেন। তাকে সর্বোতোভাবে সাহায্য করেন স্ব-স্ব এলাকার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি এবং চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামে অবস্থানরত জনদরদী বিত্তবান ব্যক্তিরা। পরবর্তীতে ঢাকা থেকে কয়েকজন মন্ত্রী এবং সরকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন উপজেলায়/থানায় রিলিফ সামগ্রী বিতরণের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। প্রায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার পর বৈদেশিক সাহায্য আসতে শুরু হয়। তাঁর কাজ দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে তিনি মরোক্কোর মারাকেসে অনুষ্ঠিত ১৯তম বিশ্ব কংগ্রেসের সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। পূর্ণাঙ্গ প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য প্রদানকারী ৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল অন্যতম। অলি আহমদ তাঁর মূল বক্তব্যে রাস্তা-ঘাট এবং সড়ক পরিবহণ সেক্টরে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করেন। নির্দিষ্টভাবে মহাসড়ক এবং তৎসম্পর্কিত অবকাঠামো নির্মাণের উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। পূর্ণাঙ্গ প্রথম অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশের মধ্যে ছিল বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৯২ সালে এপ্রিল-মে মাসে তুরস্কের যোগাযোগ মন্ত্রীর আমন্ত্রণে তিনি ঐ দেশ সফর করেন। সফরকালে জনাব অলি রেলওয়ে এবং সড়ক পরিবহণ সেক্টরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিবিড়ভাবে পরিদর্শন করেন। তিনি তুর্কী উপ-প্রধানমন্ত্রীর সাথেও বৈঠক করেন।
যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে তিনি ব্যাংককে ‘‘ট্রান্সপোর্ট এন্ড কমিউনিকেশনস ডিকেড ফর এশিয়া এন্ড দি প্যাসিফিক” অনুষ্ঠিত শীর্ষক অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেন। এতে এশিয়া মহাদেশের পরিবহণ ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রীগণ অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালের জুন মাসের ৩ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল ই,এস,সি,এ,পি (এসকেপ)। ড. অলি আহমদ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের চেয়ারম্যান মনোনীত হন।
১৯৯২ সালের ২১ নভেম্বর থেকে ৩রা ডিসেম্বর ড. অলি আহমদ মেক্সিকো সফর করেন। “সড়ক উন্নয়নের ২৫ বছর ঃ সম্ভাবনা এবং সমস্যা” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিতে মেক্সিকান সরকার তাঁকে আমন্ত্রণ জানায়। তিনি উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন।
১৯৯৩ সালে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা শরনার্থী সমস্যার সমাধান এবং সশস্ত্র শান্তি বাহিনীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। তাঁর দায়িত্ব প্রাপ্তির কয়েকদিনের মধ্যেই শান্তি বাহিনী স্ব-উদ্যোগে একতরফাভাবে বিনা শর্তে অস্ত্র বিরতির ঘোষণা দেন। ড. অলি আহমদ এবং তার কমিটির সদস্যবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগনের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উপায়গুলি খুঁজে বের করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্মরত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মতামতও গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ড. অলি আহমদ ১৯৯৩ সালের ২রা হতে ৯ই মে পর্যন্ত ভারতীয় যোগাযোগ মন্ত্রীর আমন্ত্রণে ভারত সফর করেন। সফরকালে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, রেলওয়ে মন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রী এবং পানি সম্পদ মন্ত্রীর সাথে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন। ভারত রেলওয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলিও তিনি পরিদর্শন করেন। সফরের শেষের দিকে পৃথকভাবে তিনি পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এবং ত্রিপুরা ও রাজস্থানের গভর্ণরের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা বিদ্রোহীদের ব্যাপারে ভারত সরকারকে, তিনি বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন এবং ত্রিপুরায় অবস্থানরত চাকমা শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে ভারত সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
১৯৯৫ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২রা ফেব্রæয়ারি ড. অলি আহমদ চাকমা শরণার্থী সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে পুনরায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সফর করেন। বিভিন্ন শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন এবং ত্রিপুরার গভর্ণরের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়াও ১৯৯৩ সাল থেকে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের আনাচে কানাচে সর্বস্তরের জনগণের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অস্ত্র পরিত্যাগ করার পক্ষে জনমত গঠন করেন। ভারত সরকারের সাথে চাকমা শরণার্থী ও সশস্ত্র শান্তি বাহিনীকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে ফলপ্রসু আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন ক্যাম্প হতে কোন ধরণের চুক্তি ছাড়া প্রায় দশ হাজার চাকমা শরনার্থীদেরকে স্বদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। বস্তুতঃ তিনিই সর্বপ্রথম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে “শান্তির ভীত” রচনা করেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে শান্তি বাহিনীর সাথে নতুন একটি বিতর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং অবশিষ্ট শরণার্থীরা দেশে ফিরে আসেন।
সৌদি আরবের যোগাযোগ মন্ত্রীর আমন্ত্রণে ড. অলি আহমদ ১৯৯৩ সালের ১১ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঐ দেশ সফর করেন। সফরকালে তিনি ঐ দেশের যোগাযোগ মন্ত্রী, ‘‘সৌদি ফান্ড ফর ডেভলপমেন্ট”-এর চেয়ারম্যান ও অর্থমন্ত্রীর সাথে রিয়াদে এবং ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সাথে জেদ্দায় সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের সংস্কারের জন্য ২৫ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল অনুদানের ব্যবস্থা করেন।
১৯৯৩ সালে ড. অলি আহমদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে মায়ানমার সফর করেন। সফরকালে তিনি মায়ানমারের রাষ্ট্র প্রধান অর্থাৎ স্টেট ল-এন্ড অর্ডার রেসটোরেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। এছাড়াও তিনি ঐ দেশের পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন, জাতীয় পরিকল্পনা ও অর্থনীতি এবং স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রীর সাথে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠকে মিলিত হন। এ সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যকার অনিষ্পন্ন সমস্যার সমাধান হয় এবং প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের পথ উন্মুক্ত হয়। মায়ানমারে অভ্যন্তরে ইউ.এন.এইচ.সি.আর এর অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়, যা এর পূর্বে তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না।
চীনের রেলওয়ে মন্ত্রীর আমন্ত্রণে ড. অলি আহমদ ১৯৯৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত চীন সফর করেন। সফরকালে তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী, যোগাযোগ এবং রেলওয়ে মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। এই সফরের ফলে অনেকগুলি অনিষ্পন্ন বিষয়ের সমাধান করা হয়।
ড. অলি আহমদ ১৯৯৪ সালের এপ্রিল মাসে কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এবং একই বৎসর সেপ্টেম্বরে উপসাগরীয় দেশ কাতার সফর করেন। ইরানের সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রীর আমন্ত্রণে তিনি ১৯৯৫ সালের ৭ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ইরান সফর করেন। সফরকালে তিনি সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী ছাড়াও ইরানের রাষ্ট্রপতি এবং ইরানি পার্লামেন্টের (মজলিস) স্পিকারের সাথে সাক্ষাত করেন। তিনি রেলওয়ে ও পরিবহণ সেক্টরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
“একবিংশ শতকের অবকাঠামো ঃ নতুন সুযোগ এবং বর্তমান সুবিধা” -এর উপর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান কনফারেন্সের অরগেনাইজিং কমিটির চেয়ারম্যানের আমন্ত্রণে ১৯৯৫ সালের ২ থেকে ৪ মে মালয়েশিয়া সফর করেন। সমাবেশে তিনি “বাংলাদেশ অবকাঠামোতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা” বিষয়ে একটি বক্তব্য উপস্থাপন করেন। যা উপস্থিত শ্রোতাদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। ড. অলি আহমদ ১৯৯৫ সালের ২-৯ সেপ্টেম্বর কানাডার মন্ট্রিয়লে অনুষ্ঠিত ‘২০তম বিশ্ব সড়ক কংগ্রেসে’ অংশ গ্রহণের জন্য ঐ দেশ সফর করেন।
ড. অলি আহমদ ১৯৯৫ সালের ১১-১৪ সেপ্টেম্বর জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ও.আই.সি-র ২৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সৌদি আরব সফর করেন। এশিয়া মহাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে, তিনি বক্তব্য প্রদান করেন।
১৯৯৬ সালের মার্চে গঠিত নতুন মন্ত্রী সভায় শপথ নেয়ার পর তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। কিন্তু একদিন পর পুনরায় তাকে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অর্পন করা হয়। ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ বি.এন.পি সরকার পদত্যাগ করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি ঐ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি ১৩০ মেগাওয়ার্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করেন। ১৯৯৬ সালের ১২ই জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বি.এন.পি’র দুই তৃতীয়াংশ মন্ত্রী এবং বড় বড় নেতারা নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেন, অন্যদিকে ড. অলি আহমদ চট্টগ্রামের ২টি আসন থেকে বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করেন। ঐ নির্বাচনের পর জ্ঞান পিপাসু ড. অলি একজন জাতীয় নেতা হিসাবে শত ব্যস্ততা থাকা সত্তে¡ও যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ব্রæকস্ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং বিদ্রোহের উপর গবেষণার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। গবেষণা সমাপ্ত হলে তিনি বর্ণিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন।
ড. অলি আহমদ ২০০৫ সালের ২রা এবং ৩রা আগষ্ট শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত “৩য় এশিয়ান মহিলা সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং মন্ত্রীদের সম্মেলনে” বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি একটি অধিবেশনে চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন।
ড. অলি আহমদ ২০০৬ সালের জুন মাসে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে অনুষ্ঠিত “গেøাবাল টেরোরিজম এবং এর প্রতিকার” বিষয়ের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে আমেরিকার কয়েকজন সিনেটর, কংগ্রেস্ম্যান এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দও অংশগ্রহণ করেন।
তিনি তানজেনিয়ার আরুশা শহরে ‘১লা অক্টোবর থেকে ৬ই অক্টোবর ২০০৯’ পর্যন্ত “৫৫তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী কনফারেন্স” -এ জাতীয় সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এতে তিনি “পরিবেশ দুষণ” বিষয়ক কর্মশালায় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় অংশগ্রহনকারী সকলে তাঁর বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ড. অলি আহমদ ২০০১ সাল হইতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কিছু কিছু দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজ, মন্ত্রী, এম.পি. এবং সিনিয়র দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য রাখেন। দেশের সকল স্তরের জনগণের মধ্যে এই ধরণের ঘৃণ্য কর্মকাÐের বিরুদ্ধে সচেতনতা ও দায়বদ্ধতা সৃষ্টির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বি.এন.পিকে দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য অপরিসীম চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি বিফল হন। পরবর্তীতে ২৬শে অক্টোবর ২০০৬ সালে এর প্রতিবাদে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে নতুন পার্টি এল.ডি.পি গঠন করেন। এ পার্টি গঠনের মূল লক্ষ্যই হল দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত সমাজ গঠন, প্রশাসনের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা, ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরণ এবং দেশে সুস্থ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। উল্লেখ্য যে, ড. অলি আহমদ সমগ্র জীবনে তার সততা এবং ন্যায়নীতি অক্ষুন্ন রেখেছেন। ১৯৭১ সাল থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ও সরকার পরিচালনায় তিনি সংস্কার এবং শাসন পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন।
রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী, মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য হিসেবে ড. অলি আহমদ বিভিন্ন দেশ সফর করেন। এগুলো হচ্ছেÑ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, চীন, ভ্যাটিকান সিটি, কিউবা, চেক প্রজাতন্ত্র, মিশর, ফ্রান্স, জার্মানী, গ্রীস, হল্যান্ড, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, ইতালি, জাপান, কুয়েত, লেবানন, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, মরক্কো, বার্মা, নেপাল, নেদারল্যান্ড, উত্তর-কোরিয়া, জর্ডান, পাকিস্তান, পোল্যান্ড, কাতার, রুমানিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, যুগোশ্লøাভিয়া, জাম্বিয়া, তাইওয়ান এবং তানজেনিয়া।
১৯৯২ সালে ড. অলি আহমদ তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলীর জন্য “ঝঃধঃবংসবহ’ং ডঐঙ’ং ডঐঙ”-এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে বিরল সম্মান অর্জন করেন। যা অদ্যবধি এ দেশের অন্যকোন রাজনৈতিক নেতার জন্য বিরল ঘটনা। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলীর জন্য ২০০৯ সালে ভারতের নয়াদিল্লি থেকে প্রকাশিত এশিয়া প্যাসিফিকের “ডঐঙ’ং ডঐঙ” -তেও ড. অলি আহমদের নাম পুনরায় উদ্ধৃত হয়।
তিনি সভাপতি/আহŸায়ক এবং সদস্য হিসেবে ৩০টি কেবিনেট এবং সংসদ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২৫ টি প্রতিষ্ঠান, এসোসিয়েশান, পেশাজীবী সংগঠনের সাথে জড়িত আছেন এবং ১৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সমাজ সেবা ,শিক্ষা বিস্তার এবং বীরত্বের জন্য ১৪ টি পদক লাভ করেন।
পদক তালিকা:
১. ক্যামপেইন স্টার- ১৯৬৫।
২. ওয়ার মেডেল- ১৯৬৫।
৩. তমগা-ই-জং- ১৯৬৫।
৪. বীর বিক্রম- ১৯৭১।
৫. লিবারেশন স্টার- ১৯৭১।
৬. ভিক্টরি মেডেল (বিজয় মেডেল)- ১৯৭১।
৭. কন্সটিটিউশন মেডেল- ১৯৭১।
৮. অর্ডার অব দি ন্যাশনাল ফ্লাগ থার্ড গ্রেড ১৯৭৮ (উঃ কোরিয়া)।
৯. মহান মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে “জিয়া গোল্ড মেডেল ১৯৯২”।
১০. জাসাস স্বাধীনতা স্বর্ণ পদকÑ২০০৩।
১১. জাসাস স্বাধীনতা স্বর্ণ পদকÑ২০০৫।
১২. “মাওলানা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী রিচার্স ইনসটিটিউট গোল্ড মেডেল ২০০২”- (সমাজসেবা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য)।
১৩. “চিটাগং এসোসিয়শন মেডেল ২০০২”- (চট্টগ্রাম এসোসিয়েশনের উন্নয়নে অসাধারণ অবদানের জন্য)।
১৪. জিয়া স্বর্ণ পদক ২০১১।
ড. অলি আহমদ (১৯৯১-১৯৯৬) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংসদীয় কমিটিতে বিভিন্ন পদ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। যেমনঃ
১) সদস্য, পাবলিক একাউন্টস কমিটি ১৯৮০-৮২।
২) প্রেসিডেন্ট, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, যুব উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ১৯৮২।
৩) সভাপতি, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ১৯৯১-৯৬।
৪) আহŸায়ক; ক্যাবিনেট কমিটি, মন্ত্রী পরিষদ-সিদ্ধান্তসমূহ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন ১৯৯১-৯৬।
৫) সদস্য, ক্যাবিনেট কমিটি, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী বিষয়সমূহ ১৯৯১-৯৬।
৬) সদস্য, ক্যাবিনেট কমিটি, সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত ১৯৯১-৯৬।
৭) সদস্য, ক্যাবিনেট কমিটি, রুল অব বিজনেস ১৯৯১-৯৬।
৮) সদস্য, ক্যাবিনেট কমিটি, সিনিয়র এপয়েন্টমেন্ট এন্ড প্রমোশন ১৯৯১-৯৬।
৯) সদস্য, ক্যাবিনেট কমিটি, ইকোনোমিক এন্ড ফিন্যান্সিয়াল মের্টাস ১৯৯১-৯৬।
১০) সদস্য, প্রশাসনিক পুনঃগঠন সম্পর্কিত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি ১৯৯১-৯৬।
১১) সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি ১৯৯১-৯৬।
১২) সদস্য, সেচ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত জাতীয় কমিটি ১৯৯১-৯৬।
১৩) সদস্য, সশস্ত্র বাহিনীর বেতন-ভাতা বিষয়ক ক্যাবিনেট-সাব কমিটি ১৯৯১-৯৬।
১৪) সদস্য, ন্যাশনাল ট্রেনিং কাউন্সিল ১৯৯১-৯৬।
১৫) সদস্য, ন্যাশনাল ট্যুরিজম কাউন্সিল ১৯৯১-৯৬।
১৬) সদস্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানী এবং খনিজ সম্পদ সম্পর্কিত ন্যাশনাল কাউন্সিল ১৯৯১-৯৬।
১৭) সদস্য, ৭ম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধাস্ত বাস্তবায়ন বিষয়ক সাব-কমিটি ১৯৯১-৯৬।
১৮) আহŸায়ক, থানা এন্ড ইউনিয়ন ডিলিমিটেশন সম্পর্কিত নিকার (এন.আই.সি.এ.আর) সাব-কমিটি ১৯৯১-৯৬।
১৯) সদস্য, ন্যাশনাল পপুলেশন কাউন্সিল ১৯৯১-৯৬।
২০) আহŸায়ক, প্রশাসনিক পুনর্গঠন বিষয়ক কাউন্সিল কমিটি ১৯৯১-৯৬ ।
২১) আহŸায়ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক কমিটি ১৯৯১-৯৬।
২২) সহ সভাপতি, গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বিষয়ক জাতীয় কমিটি ১৯৯১-৯৬ ।
২৩) বিকল্প সভাপতি, সাফ গেমস ১৯৯১-৯৬।
২৪) ভাইস চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ১৯৯১-৯৬।
২৫) সদস্য, সংসদীয় কার্য্য উপদেষ্টা কমিটি- ২০০১-২০০৬।
২৬) সদস্য, জাতীয় স্থায়ী কমিটি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণ কমিটি)- ১৯৮৪-২০০৬।
২৭) সদস্য, শিশু অধিকার আন্তগ্রæপ (পধপপঁং), (সারা বিশ্বের সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত)- ২০০০-অদ্যাবধি।
২৮) চেয়ারম্যান, “পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি”- ফেব্রæয়ারী, ২০০৯- ২০১১।
২৯) সভাপতি, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ১৯৯২-৯৩।
৩০) সদস্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি- ২০১১-২০১৩।
ড. অলি আহমদ যেসব সংগঠন/ সংস্থা/পেশাজীবী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত
১) প্রেসিডেন্ট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- ২০০৭ – অদ্যাবধি পর্যন্ত।
২) প্রধান উপদেষ্টা, দৈনিক জনপদ- ১৯৯৪।
৩) চেয়ারম্যান, ডেইলি ঈশান পাবলিকেশন গ্রæপ (একটি দৈনিক খবরের কাগজ)- ১৯৯৭-৯৮।
৪) প্রধান পৃষ্ঠপোষক, কাশেম-মাহবুব হাই স্কুল, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম- ১৯৯১ হতে।
৫) সম্মানীত পৃষ্ঠপোষক, ইনসটিটিউট অব এপলাইড হেলথ সায়েন্স, চট্টগ্রাম (প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ)- ১৯৯১ হতে।
৬) প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বাংলাদেশ আঞ্জুমান-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমীন, ঢাকা- ১৯৯২ হতে।
৭) আজীবন সদস্য, কিডনী ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম- ১৯৯১ হতে।
৮) আজীবন সদস্য,চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা- ১৯৮৪ হতে।
৯) সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম সমিতি ট্রাস্টি বোর্ড, ঢাকা- ১৯৮৪-৮৬।
১০) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, চিটাগাং (ইউ.এস.টি.সি)- ১৯৯১।
১১) আজীবন সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী অফিসার কল্যাণ সংস্থা (রাওয়া)-১৯৮৪ হতে ।
১২) আজীবন সদস্য, সংসদ সদস্য ক্লাব- ১৯৮১ হতে ।
১৩) সম্মানিত সদস্য, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা- ১৯৯২-৯৬।
১৪) আজীবন সদস্য, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব, ঢাকা সেনানিবাস, ১৯৯২ হতে।
১৫) আজীবন সদস্য, আর্মি গলফ্ ক্লাব, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট।- জুলাই, ২০০৯।
১৬) আজীবন সদস্য, কক্সবাজার প্রেসক্লাব ১৯৯৩ হতে ।
১৭) প্রধান পৃষ্ঠপোষক, চন্দনাইশ প্রেসক্লাব -১৯৯১ হতে ।
১৮) আজীবন সদস্য, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ২০০৬ হতে।
১৯) আজীবন সদস্য, চট্টগ্রাম সমিতি, যুক্তরাজ্য- ১৯৯৩ হতে ।
২০) প্রধান উপদেষ্টা, চন্দনাইশ সমিতি, ঢাকা-২০০৯ হতে।
২১) আজীবন সদস্য, চন্দনাইশ সমিতি, ঢাকা-২০০৯ হতে।
২২) আজীবন সদস্য, চন্দনাইশ সমিতি, চট্টগ্রাম- ২০০৭ হতে।
২৩) আজীবন সদস্য, সোসাইটি ফর এসিসন্টেন্স টু হিয়ারিং ইম্পিয়ার্ড চিলড্রেন (সাহিক)- ২০০৬ হতে।
২৪) চেয়ারম্যান, সোসাইটি ফর এসিসন্টেন্স টু হিয়ারিং ইম্পিয়ার্ড চিলড্রেন (সাহিক)- ২০০৬ -২০০৮।
২৫) প্রধান পৃষ্ঠপোষক, সোসাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ফর কর্ডিনেশন, চট্টগ্রাম-২০০৮ হতে।
ড. অলি আহমদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান
১) অলি আহমদ বীর বিক্রম কলেজ, সাতবাড়িয়া, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
২) কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম ডিগ্রী কলেজ, বাজালিয়া, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
৩) আমানতছফা-বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
৪) অলি আহমদ হাইস্কুল, বরকল, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
৫) মমতাজ বেগম কিন্ডারগার্টেন স্কুল, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
৬) মমতাজ বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
৭) দোহাজারি-জামিজুরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
৮) চরম্বা অলি আহমদ বীর বিক্রম উচ্চ বিদ্যালয়, লোহাগাড়া উপজেলা, চট্টগ্রাম।
৯) জনার কেঁওচিয়া আদর্শ হাই স্কুল, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
১০) কেঁওচিয়া আদর্শ হাই স্কুল, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
১১) জাফরাবাদ হাই স্কুল, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
১২) কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম স্টেডিয়াম, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম।
১৩) অলি আহমদ বীর বিক্রম এতিম খানা, হাশিমপুর, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
১৪) অলি আহমদ বীর বিক্রম এতিমখানা, বরকল, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
১৫) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম।
১৬) বৃদ্ধা আবাসন ও এতিমখানা, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
১৭) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম হাই স্কুল, মোহরী পাড়া, ধর্মপুর, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
১৮) দোহাজারী-জামিজুরী কারিগরি কলেজ, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
১৯) কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম কারিগরি কলেজ, বাজালিয়া, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
২০) কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম এতিমখানা, মকবুলিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, হাসিমপুর, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
তাঁর প্রত্যক্ষ প্রচেষ্টায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে চট্টগ্রামের নিম্নলিখিত কলেজগুলিকে সরকারীকরণ করা হয়। সাল ১৯৭৬ – ১৯৮০।
(ক) গাছবাড়ীয়া সরকারী কলেজ, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
(খ) কক্সবাজার সরকারী কলেজ।
(গ) বান্দরবান সরকারী কলেজ।
(ঘ) পটিয়া সরকারী কলেজ, চট্টগ্রাম। (ঙ) বোয়ালখালী কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারী কলেজ, চট্টগ্রাম।
(চ) চট্টগ্রাম সরকারী মহসীন কলেজ।
(ছ) চট্টগ্রাম সরকারী সিটি কলেজ।
(জ) চট্টগ্রাম সরকারী মহিলা কলেজ।
ড. অলি আহমদ একজন লেখক হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন এবং তিনি তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মাধ্যমে, তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ, চিন্তাধারা, দেশের সামগ্রিক অবস্থা এবং উত্তোরণের উপায়, মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভের সঠিক তথ্য এবং ইতিহাসের হারানো অধ্যায় তুলে ধরেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের তালিকা নিম্নরূপ ঃ
(১) “আমার সংগ্রাম, আমার রাজনীতি” – ১ সেপ্টেম্বর, ২০০১।
(২) “রিভ্যুলিউশান, মিলিটারি পার্সোনেল এন্ড দ্যা ওয়ার অব লিবারেশান ইন বাংলাদেশ” – ২০০৩।
(৩) “আমার আদর্শ” মার্চ – ২০০৪।
(৪) “আমার রাজনীতি” – ডিসেম্বর ০৭।
(৫) “রাষ্ট্রবিপ্লব, সামরিক বাহিনীর সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ” – ফেব্রæয়ারী, ০৮।
(৬) “যা দেখেছি, যা বলেছি, যা হয়েছে”- এপ্রিল, ০৮।
(৭) “ব্যাট্লস দেট্ আই ফট এন্ড ইন্টারভিউস অব লিবারেশান ওয়ার হিরো’স” – ২০০৯।
(৮) “আওয়ামী দুশাসন- দেশ বিপদগ্রস্ত”- ২০১৫।
(৯) “ক্ষমতার লোভ- পাপের প্রাশ্চচিত্ত”- ২০১৫।
(৯) “গণতন্ত্র- অব্যাহত উন্নয়ন ও সুশাসন- আমার প্রয়াস”- ২০১৫।
(১০) “এরশাদ দি কিলার”- ২০১৫।
বই দুটি জার্মানী থেকে ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়েছে।
১.
1. Revolution, Military Personnel and The War of Liberation in Bangladesh- Published from Germany
2. Battles that I Fought and Interviews of Liberation War Heroes- Published from Germany
তিনি তিনবার পবিত্র হজ্ব পালনসহ প্রায় ৩০ বারের উর্ধ্বে পবিত্র উমরাহ পালন করেন।
সেনাবাহিনীতে চাকুরীরত অবস্থায় তিনি ফুটবল, ভলিবল এবং লন টেনিস খেলতেন। নব্বই দশক হতে তিনি একজন শৌখিন গলফার হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং একাধিকবার পুরস্কারপ্রাপ্ত হন।
ড. অলি আহমদ এবং বেগম মমতাজ দুই পুত্র ও দু’কন্যা সন্তানের জনক ও জননী। তাঁর সহর্ধমিনী বেগম মমতাজ ১২ জুন ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জুন ২০০১ সাল পর্যন্ত তাঁর দায়িত্ব পালন করেন।